ফ্রী গেস্ট পোস্টিং অথবা ফ্রী ব্যাকলিংক পেতে পোস্ট করুন আমাদের সাইটে বিস্তারিত জানুন পোস্ট করুন !

বাংলা রোমান্টিক গল্প ❤️ তোমার নামে ❤️ পর্ব - ০৩ Bangla Romantic Story ❤️ Tomar Nemee No- 03

বাংলা রোমান্টিক গল্প ভালোবাসার মানুষের কাছে লেখা " তোমার নামে " এই গল্পটি লেখক তার প্ৰিয় মানুষের নামে লিখেছেন, এ যেনো এক গভীর ভালো বাসা তোমার নামে
বাংলা রোমান্টিক গল্প ❤️ তোমার নামে ❤️ পর্ব - ০৩
বাংলা রোমান্টিক গল্প ❤️ তোমার নামে ❤️ পর্ব - ০৩


বাংলা রোমান্টিক গল্প ❤️ তোমার নামে ❤️ পর্ব - ০৩

গুমোট বাতাসে নেই কোনো আলোড়ন।থমথমে,ভ্যাবসা গরমে শুধু শোনা যাচ্ছে ভারী পুরুষালী ভয়ংকর নিঃশ্বাসের মাতম।ইবরাযের কানের পাশ দিয়ে উষ্ণ নোনতা জলের প্রস্রবণ।মুক্তো ঝরা ঘামে ভিজে আছে মুখমণ্ডল।পুরু ভ্রু জোড়ার কার্ণিশ বেয়ে টুপ করে এক ফোঁটা ঘাম পড়তেই দাঁতের সাথে দাঁত কিড়মিড় করে হাতে থাকা হকিস্টিক দিয়ে এক বারি মারে সামনে হাত আর মুখ বাঁধা ছেলেটির চোয়াল বরাবর।মুখ দিয়ে অস্ফুট গোঙানি বের হয়।প্রায় মিনিট পনেরো অনবরত বেধড়ক পিটিয়ে থামে ইবরায।তার সামনে হাঁটু ভেঙে বসা তিনটি ছেলেই এখন আর বসে নেই।তার শুয়ে আছে মেঝেতে।ইবরায চোখ দিয়ে ইশারা করতেই দাঁড়িয়ে থাকা তার প্রভুভক্ত চ্যালা একটা চেয়ার টেনে দেয়।ইবরায হকিস্টিক টা মেঝেতে ঠেকিয়ে শান্ত হয়ে বসে।ক্ষীপ্র গলায় বললো---

"আমার ভাই রাস্তা থেকে তুলে এনে তোদের বুকে জায়গা দিয়েছে।আর তোরা তারই খেয়ে তার থালায় ফুটো করে চলছিস।শালা...।"

উত্তেজিত ইবরায আরো কয়েকটা আঘাত করে বসে ছেলেগুলো কে।দাঁড়িয়ে থাকা প্রশান্ত কে বললো তাদের মুখের বাঁধন খুলে দিতে।মুখের বাঁধন খুলতেই ছেলেগুলো অার্তনাদ করে উঠে বললো---

"ভাই,ভাই মাফ কইরা দেন।আর এই কাম করমু না।"

ইবরায এক হাঁটু ভেঙে বসে তাদের মধ্যে একটি ছেলের চুলের মুঠি ধরে বললো---

"আরেকবার করলে তো তোদের জানই নিয়ে নেবো আমি।শালা কুত্ত** দল।আর কোনোদিন যদি কোনো মেয়ের সাথে বদমাইশি করিস চোখ তুলে ফেলবো একদম।"

ফুঁসলে উঠে প্রশান্তকে আদেশ করে ইবরায।

"জানালার পর্দাগুলো খোল।লাইট অন কর।"

প্রশান্ত আদেশ করা কাজগুলো ঝটপট করে ফেললো।হঠাৎ আলোর বেগে চোখ জ্বলে উঠে ছেলেগুলোর চোখ।ইবরাজ দারাজ গলায় বললো--

"উঠে বস।"

শশব্যস্ত হয়ে উঠে বসে ছেলেগুলো।ইবরায শক্ত চোখে তাকিয়ে দৃঢ়চিত্তে বললো---

"এইখান থেকে বেরিয়ে সোজা ওই মেয়ের বাড়ি খুঁজে বের করবি।ওদের আশেপাশের দুই চার ঘরের লোকদের ডেকে সবার সামনে মেয়েটির পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবি।সাথে ওর ছোট ভাইয়েরও।আর বলবি আমার ভাই এইসবের কিছু জানে না।হি ইজ আ গ্রেট ম্যান।আর কোনোদিন যদি আমার ভাইয়ের কথা...।"

কথা শেষ করলো না ইবরায।বেতালভাবে এলোপাথাড়ি তিনজনকে আরো পেটালে।তিনজনের চিৎকারে বদ্ধ ঘর যেনো কেঁপে উঠলো।একটু ধাতস্থ হয়ে ইবরায বললো--

"বের হ,বের হ। এখান থেকে।"

প্রশান্ত হাতের বাঁধন খুলতেই ছেলেগুলো হন্তদন্ত হয়ে ব্যথায় জর্জরিত পা নিয়ে দৌঁড় মারে।হাতের হকিস্টিকটা ছুঁড়ে ফেলে ইবরায।কপালের ঘামের নহর টেনে মুছে ফেলে।ফ্যানটা ছেড়ে বুক ফুলিয়ে নিঃশ্বাস নেয়।নিমীলিত চোখ বুঝে অনুভব করে ইলেক্ট্রনিক পাখার সেই শীতল আচ্ছাদন।প্রশান্ত চট করেই ডেকে উঠে।চোখ মেলে তাকায় ইবরায।ভ্রু গুঁজ করে বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে তাকায়।প্রশান্ত চাপা গলায় বললো---

"ভাই,ভাবির কোচিং ছুটির সময় হয়েছে।যাবেন না?

অধর কোণে বাঁকা হাসে ইবরায।ফিচেল গলায় বললো--

"ভাবি কেন হৃদয়ের রাণি বল।ওকে।গেলাম আমি।ভাইয়া আসার আগেই এইসব পরিষ্কার করে ফেলবি।"

"জ্বী ভাই।"

ছোট্ট দম ফেলে ইবরায।স্বগতোক্তি করে বললো---

"স্নিগ্ধা রাণি,হৃদয় পানি।"

,

,

,

তেতুল গাছের শুকনো পাতা ঝরে কচি পাতা জেগেছে।বিছিয়ে আছে তার পাতা গাছের নিচটায়।কিশোরী বিকেলের ম্রিয়মান আলোর ছটা সেই নব্য পাতার ফাঁক গলিয়ে পিচঢালা রাস্তা ছুঁইছে।কাঁধের একপাশে ব্যাগ ঝুলিয়ে নবযুবতী এক শ্যামবর্ণী গুঁটি গুঁটি পায়ে হেঁটে আসছে।পাশে তার বান্ধবী তিশা।

তেতুল গাছের নিচটায় থেমে আছে একটা পাজেরো জীপ।তার লুকিং গ্লাসে এক সুদর্শন পুরুষ চেয়ে আছে নির্নিমেষ।

তিশার হাতের খোঁচায় দীপ্ত হয় স্নিগ্ধতার অবচেতন মন।ঝলমলে গলায় তিশা বললো---

"এই দেখ,ইবরায ভাইয়ার গাড়ি।নিশ্চয়ই তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে?

স্নিগ্ধতা কাঁপা কাঁপা চোখে তাকায়।লুকিং গ্লাসে ইবরাযের সেই হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখতে পায় সে।লজ্জায় ডুবে আসে তার চোখ।জীপ থেকে নেমে দাঁড়ায় ইবরায।দৃঢ় হয়ে দাঁড়ায় সে।প্রগাঢ় তার দৃষ্টি।তিশা খোঁচা মেরে বললো---

"তোকে দেখলে আমার হিংসে হয় রে স্নিগ্ধতা।একদম হিরোর মতো বর পেলি।যেমনটা তুই চেয়েছিস।একদম সারাইনাডু মুভির আল্লু অর্জুন।এই,এই তুই তো এমনটাই চেয়েছিস তাই না!ইশশ!

সেদিন আমিও যদি তোর মতো উইশ করতাম।তাহলে আমার ভাগ্যেও  রাম চরণ তেজা জুটতো।"

স্নিগ্ধতা কপট রেগে বললো--

"চুপ কর।কী বলছিস এইসব?

"ঠিকই বলছি।দেখ,দেখ কীভাবে তাকিয়ে আছে।"

স্নিগ্ধতা লজ্জাভরা চোখে তাকায়।ইবরাজ প্রগাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।একটু সামনে এগুতেই দমকা বাতাসে ঝুপঝুপ করে তেতুল গাছের পাতা খসে পড়ে স্নিগ্ধতার গায়ের উপর।ইবরায তা দেখে মৃদু হাসে।তিশা অনুসন্ধানী চোখে তাকায় ইবরায চোখের মনির কোণ ঘুরায়।ব্যস্ত গলায় বলে উঠে তিশা---

"ইশ!

আমার মোবাইলটা যে কোচিং এ রয়ে গেলো।তুই দাঁড়া আমি নিয়ে আসছি।"

স্নিগ্ধতা কিছু বলার আগেই চম্পট লাগায় তিশা।অপ্রস্তুত হয় স্নিগ্ধতা।দুরুদুরু মনে কাঁপন শুরু হয় তার শরীরে। ইবরায সামনে এসে দাঁড়ায়।বুক ভরে শ্বাস নেয়।দুই হাত দিয়ে ওড়নার কোণা খামচে ধরে রাখে স্নিগ্ধতা।ফাঁকা ঢোক গিলছে সে।ইবরায কোমল গলায় প্রশ্ন ছুঁড়ে---

"কাল কল কেন করো নি?চিঠির পেছনে নাম্বার নিশ্চয়ই দেখেছো।"

 স্নিগ্ধতা ছোট ছোট চোখে ঝরা তেতুল পাতা দেখে।ইবরাযের দিকে তাকাতে সে পারছে না।নিজের প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে ইবরায আবার বললো---

"কাল সারারাত আমি তোমার কলের অপেক্ষা করেছি।এতো পাষাণ কী করে হলে তুমি!

স্নিগ্ধতা ঝট করেই চোখ তুলে তাকায়।ইবরায নিষ্প্রাণ চোখে তাকিয়ে আছে।কাতর হয়ে উঠে স্নিগ্ধতার মায়াভরা চোখ দুটো।ইবরায নরম গলায় বললো---

"আমাকে পছন্দ নয় তোমার?তাহলে আমি না করে দিচ্ছি এখনি।"

ইবরায তার মোবাইল বের করতেই তার হাত চেপে ধরে স্নিগ্ধতা।অসহিষ্ণু গলায় বললো---

"না,না।এমন করবেন না প্লিজ।"

মৃদু হাসে ইবরায।স্বশব্দে বললো---

"কেমন আছো স্নিগ্ধা রাণী?

শ্বাস আটকে আসে স্নিগ্ধতার।রুদ্ধবাকে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে সে।ইবরায তার মুখটা স্নিগ্ধতার কানের কাছে নিয়ে বললো--

"স্নিগ্ধা রাণী,হৃদয় পানি।"

স্নিগ্ধতা একটা লম্বা শ্বাস টেনে নিয়ে বড় বড় চোখে তাকায়।বিগলিত হাসে ইবরায।মোলায়েম গলায় বললো--

"আজ অপেক্ষা করবো আমি।অবশ্যই কল করবে।"

স্নিগ্ধতা ভাঙা ভাঙা শব্দে মিইয়ে গলায় বললো---

"আআমার কাছে মোবাইল নেই।আআআপু বলেছে এইবার আসলে নিয়ে আসবে।"

"আমার শাশুড়ি মার তো আছে।সেইটা নিয়ে কল করবে।আজ তোমার কন্ঠ না শুনে কিন্তু আমি ঘুমাবো না।তুমি নিশ্চয়ই চাইবে না আমি সারারাত জেগে থাকি।"

"কিকিইইন্তু...।"

হঠাৎ করে অদ্ভুত কান্ড করে ইবরায।স্নিগ্ধতার কানের কাছে ফুঁ মারে।ভয়ে আঁতকে উঠে স্নিগ্ধতা।হতবুদ্ধি হয়ে সামনের দিকে না বাড়াতেই তার হাত পেছন থেকে টেনে ধরে ইবরায।ফিসফিসিয়ে বললো---

"ভাইয়া,ভাবি তোমাদের বাসায় গিয়েছে।তোমাকে শাশুড়ি মা বলেনি আজ কোচিং না যেতে?

ইবরাযের অতর্কিত স্পর্শে স্নিগ্ধতার সারা অঙ্গে ঝংকার উঠে।কম্পনরত গলায় বললো---

"আআমার জরুরী ক্লাস ছিলো।"

"ওকে।জলদি যাও।ভাইয়া,ভাবি তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।"

ইবরায তার হাতের মুঠ শিথিল করতেই ছুট লাগায় স্নিগ্ধতা।গলা উঁচু করে ইবরায বললো---

"স্নিগ্ধা রাণী,আই এম ওয়েটিং।"



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বাগতম !!! আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য, নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের সাইটের সাথেই থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.
Amarbangla.top Discuss about web designing Tech
Hello, How can we help you?
Start chat...