বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয় স্থান: আপনার চূড়ান্ত ভ্রমণ গাইড 🗺️
ভূমিকা: এক নজরে ৬৪ জেলার অসামান্য সৌন্দর্য
আসুন, আমরা স্বীকার করি—বাংলাদেশের মতো এত বৈচিত্র্যময় দেশ খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন। উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের গর্জন পর্যন্ত, এই ছোট্ট দেশটির প্রতিটি জেলা যেন এক-একটি আলাদা গল্প বহন করে। আপনি যদি একজন প্রকৃত ভ্রমণপিপাসু হন, তবে আপনার জন্য এই পোস্টটি একটি কম্পাস হিসেবে কাজ করবে। কেন জানেন? কারণ এখানে আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয় স্থান নিয়ে।
অনেকেই মনে করেন, ভ্রমণের জন্য হয়তো শুধু হাতে গোনা কয়েকটি জেলাতেই যাওয়া যায়। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল! আমাদের প্রতিটি জেলা, সে হোক পাহাড়ঘেরা বান্দরবান কিংবা ঐতিহ্যবাহী বগুড়া, সবারই নিজস্ব কিছু বিশেষত্ব আছে। ইতিহাসের সাক্ষী স্থাপত্য, প্রকৃতির আপন হাতে গড়া নয়নাভিরাম দৃশ্য, আর লোকাল সংস্কৃতির অসাধারণ মিশ্রণ—সবকিছুই পাবেন এই ৬৪ জেলায়। আমাদের লক্ষ্য হলো, এই ব্লগের মাধ্যমে আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনাকে আরও সহজ, আরও অর্থবহ করে তোলা।
২০২৫ সালের কনটেন্ট আপডেটের দিকে লক্ষ্য রেখে বলতে পারি, পাঠকরা এখন শুধু তথ্য চায় না, তারা চায় একটি সম্পূর্ণ গাইডলাইন। এই গাইডলাইন আপনাকে শুধু জায়গার নাম বলবে না, বরং প্রতিটি অঞ্চলের বিশেষ আকর্ষণ, সেখানে কীভাবে যাবেন, এবং কী কী অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আপনি যখন বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করবেন, তখন যেন আপনার প্রস্তুতি থাকে শতভাগ নিখুঁত। তাই আর দেরি না করে, চলুন শুরু করা যাক আমাদের এই মহাযাত্রা— যেখানে বাংলার প্রতিটি কোণ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে নতুন এক আবিষ্কারের বার্তা নিয়ে। মনে রাখবেন, ভ্রমণ শুধু স্থান দেখা নয়, নতুন কিছু শেখা এবং নিজেকে সমৃদ্ধ করার নাম। 🇧🇩
1️⃣ ঢাকা বিভাগ: ঐতিহাসিক রাজধানী ও আধুনিক শহর 🏙️
ঢাকা বিভাগ শুধু প্রশাসনিক কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির মূল ধারক। এই বিভাগে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ মোট ১৩টি জেলা রয়েছে। পুরনো ঢাকার অলিগলিতে লুকিয়ে আছে মোগল আমলের অনেক স্থাপত্য। এখানকার লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল এবং তারা মসজিদ হলো ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। এই স্থানগুলো দেখলে আপনি পুরনো দিনের ঢাকা শহরের জীবনযাত্রা অনুভব করতে পারবেন।
ঢাকার বাইরে গাজীপুর তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও রিসর্টের জন্য বিখ্যাত। গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ী এবং সাফারি পার্ক পরিবার নিয়ে একদিনের ভ্রমণের জন্য দারুণ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, যা একসময় বাংলার রাজধানী ছিল, এখন লোকশিল্প জাদুঘর এবং পানাম সিটি নিয়ে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই প্রাচীন ধ্বংসাবশেষগুলো আপনাকে সেই সোনালী দিনের কথা মনে করিয়ে দেবে।
মুন্সিগঞ্জে আছে ইদ্রাকপুর কেল্লা, যা একসময় জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করত। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ার কারণে এই জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো খুব সহজে ঘুরে আসা যায়। অন্যদিকে, কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো যেমন শোলাকিয়া ঈদগাহ্ ময়দান এবং মিঠামইলে অবস্থিত রাষ্ট্রপতির বাসভবন নতুন আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। যদি আপনি এক ছাদের নিচে আধুনিকতা ও ঐতিহ্য দুটোই দেখতে চান, তবে ঢাকা বিভাগ আপনার জন্য আদর্শ। 🧭 ভ্রমণ টিপস: পুরনো ঢাকায় রিকশা ভ্রমণ একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেবে।
ছবি: লালবাগ কেল্লা, ঢাকা (Source: Pixabay)
2️⃣ চট্টগ্রাম বিভাগ: পাহাড়, সমুদ্র ও প্রকৃতির অপার লীলাভূমি 🌊
চট্টগ্রাম বিভাগ যেন প্রকৃতির হাতে আঁকা এক বিশাল ক্যানভাস। এটি ১০টি জেলা নিয়ে গঠিত এবং এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলো। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সৈকত হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এখানে সূর্যাস্তের দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম—অর্থাৎ বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি—হলো অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের স্বর্গ। বান্দরবানের নীলগিরি, নীলাচল, এবং বগা লেক হলো মেঘ আর পাহাড়ের এক দারুণ মিলনস্থল। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেক এবং ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এই জেলাগুলোর পাহাড়, ঝর্ণা, এবং ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
ফেনীর শর্শদি দিঘী, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, এবং লক্ষ্মীপুরের বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনাও ভ্রমণপিপাসুদের নজর কাড়ে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং ওয়ার সিমেট্রি বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। এই বিভাগের প্রতিটি কোণেই আপনি প্রকৃতির এক নতুন রূপ দেখতে পাবেন। যদি আপনি পাহাড়ের নিস্তব্ধতা এবং সমুদ্রের বিশালতা একসাথে উপভোগ করতে চান, তবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখবেন, পাহাড়ি অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য স্থানীয় গাইড নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ⛰️
3️⃣ সিলেট বিভাগ: চায়ের বাগান আর সবুজ প্রকৃতির মায়াজাল 🌿
সিলেট মানেই সবুজ আর সতেজতার সমাহার। এই ৪টি জেলা চা-বাগান, হাওর, এবং পবিত্র মাজার শরীফের জন্য বিখ্যাত। সিলেটের লালাখাল এবং জাফলং-এর সৌন্দর্য চোখ ধাঁধানো। চা বাগানগুলোর সারি পর্যটকদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষণ। বৃষ্টির পরে এই অঞ্চলের সবুজ আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ-এ অবস্থিত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, যেখানে আপনি বিরল প্রজাতির জীবজন্তু ও গাছপালা দেখতে পাবেন। এটি প্রকৃতিপ্রেমী এবং বার্ড ওয়াচারদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর হলো বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জলাভূমি, যা বর্ষাকালে তার রূপ পরিবর্তন করে। নৌকায় হাওর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ।
হবিগঞ্জের রঘুনন্দন পাহাড় এবং হবিগঞ্জ পুরোনো বাজার স্থানীয় ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করে। সিলেটের মাজার শরীফগুলো ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। হাওর অঞ্চলের বিশাল জলরাশি আর মেঘালয়ের পাহাড়ের দৃশ্য দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। সিলেটকে বলা হয় 'প্রাচ্যের লন্ডন', যা তার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং সুন্দর বিন্যাসের জন্য জনপ্রিয়। 🍃
4️⃣ রাজশাহী বিভাগ: প্রাচীন ইতিহাস ও বরেন্দ্রভূমির ঐতিহ্য 🏰
রাজশাহী বিভাগ, যা বরেন্দ্রভূমি নামে পরিচিত, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক বিশাল সংগ্রহশালা। এই ৮টি জেলার মধ্যে রাজশাহীতে রয়েছে পদ্মার পাড় এবং বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। রাজশাহীর সিল্ক বিখ্যাত, তাই এখানকার সিল্ক কারখানাগুলোতেও একবার ঘুরে আসতে পারেন।
বগুড়ার মহাস্থানগড় হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ঐতিহাসিক স্থানগুলোর একটি। এই প্রাচীন নগরীটি আপনাকে হাজার বছরের ইতিহাসের সাক্ষী করবে। এছাড়া, নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বা সোমপুর মহাবিহার ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত, যা বৌদ্ধ স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন।
নবাবগঞ্জের ছোট সোনা মসজিদ এবং নাটোরের উত্তরা গণভবন (দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি) মুঘল এবং ব্রিটিশ স্থাপত্যের দারুণ মিশ্রণ দেখায়। পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই বিভাগটি মূলত যারা বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং স্থাপত্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য সেরা গন্তব্য। 🏛️ স্থানীয় মিষ্টি, যেমন বগুড়ার দই, চেখে দেখতে ভুলবেন না!
5️⃣ খুলনা বিভাগ: সুন্দরবন ও বন্যপ্রাণীর রাজ্য 🐅
খুলনা বিভাগ তার প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এই ১০টি জেলার প্রধান আকর্ষণ হলো সুন্দরবন, যা বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এখানে যাওয়া এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।
বাগেরহাটে রয়েছে ষাট গম্বুজ মসজিদ, যা ১৫শ শতকের এক অসাধারণ স্থাপত্য নিদর্শন। এটিও ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত। খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলো এবং যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যটকদের কাছে পরিচিত।
সাতক্ষীরার সুন্দরবন অংশ এবং কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার হলো এই বিভাগের অন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। লালন শাহের মাজার ভক্ত ও শিল্পপ্রেমীদের জন্য এক তীর্থস্থান। এই বিভাগটি মূলত যারা বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চান, তাদের জন্য অসাধারণ। খুলনা ভ্রমণে নিরাপত্তা ও গাইডের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। 🛶
6️⃣ বরিশাল বিভাগ: শস্যভান্ডার ও সমুদ্র কন্যা কুয়াকাটা 🍚
বরিশাল বিভাগকে প্রায়শই 'বাংলার শস্যভান্ডার' বলা হয়। এই ৬টি জেলার প্রধান আকর্ষণ হলো সমুদ্র কন্যা কুয়াকাটা, যা পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত। কুয়াকাটায় একই স্থান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়, যা বিরল। এর ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত খুবই আকর্ষণীয়।
বরিশালের ভাসমান পেয়ারা বাগান এক অসাধারণ দৃশ্য। বর্ষাকালে নৌকায় এই বাগানগুলোর মাঝে ভ্রমণ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা দেয়। ভোলার মনপুরা দ্বীপ তার শান্ত পরিবেশ এবং প্রকৃতির জন্য ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়। ঝালকাঠির অনেকগুলো নদী ও খাল রয়েছে, যা এই অঞ্চলকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।
পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং বরগুনার সুন্দরবনের অংশবিশেষও দর্শনীয়। এই অঞ্চলের মানুষজন খুবই অতিথিপরায়ণ। বরিশাল হলো মূলত নদী ও জলপথের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আদর্শ। যদি আপনি স্রোতস্বিনী নদীর কলতান আর সবুজ প্রকৃতির মিশেল দেখতে চান, তবে বরিশালের বিকল্প নেই। 🌅
7️⃣ রংপুর বিভাগ: হিমালয়ের স্পর্শ ও প্রাচীন স্থাপত্য 🏔️
রংপুর বিভাগ বাংলাদেশের উত্তরের জেলাগুলো নিয়ে গঠিত। এই ৮টি জেলার মধ্যে পঞ্চগড় থেকে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়, যা শীতকালে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। পঞ্চগড়ের চা বাগান এখন উত্তরাঞ্চলে নতুন পর্যটন আকর্ষণ।
দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির (কান্তনগরের মন্দির) এবং রামসাগর দিঘী প্রাচীন স্থাপত্য এবং ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য বিশেষ স্থান। ঠাকুরগাঁওয়ের শালবন এবং রংপুরের কারমাইকেল কলেজ-এর স্থাপত্যশৈলীও উল্লেখ করার মতো।
কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর পার এবং লালমনিরহাটের পুরোনো স্থাপনাগুলোও আকর্ষণীয়। এই অঞ্চলটি ইতিহাস ও প্রকৃতির এক শান্ত মিশ্রণ। রংপুর বিভাগ হলো যারা নিরিবিলি এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে ভ্রমণ করতে চান, তাদের জন্য সেরা গন্তব্য। ভ্রমণকালে শীতকালে পর্যাপ্ত গরম কাপড় নিতে ভুলবেন না। 🕌
8️⃣ ময়মনসিংহ বিভাগ: লোকসাহিত্য ও গারো পাহাড়ের কোলে 🏞️
ময়মনসিংহ বিভাগ বাংলাদেশের নবীনতম বিভাগগুলোর মধ্যে একটি, যা ৪টি জেলা নিয়ে গঠিত। এই অঞ্চলের প্রধান আকর্ষণ হলো ময়মনসিংহ শহর এবং তার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ। ময়মনসিংহের শশী লজ এবং আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল পুরোনো জমিদার বাড়ির স্থাপত্য দেখায়।
নেত্রকোণার বিরিশিরি এবং এর চীনা মাটির পাহাড় পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। এখানকার বিজয়পুর সীমান্ত এবং সোমেশ্বরী নদীর স্বচ্ছ জল মুগ্ধ করে। জামালপুরের মদিনার টিলা এবং শেরপুরের গজনী অবকাশ কেন্দ্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।
এই বিভাগটি গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রকৃতির শান্ত ও সবুজ রূপ দেখা যায়। ময়মনসিংহ মূলত লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতির পীঠস্থান। যারা প্রকৃতির মাঝে নিরিবিলি সময় কাটাতে চান এবং স্থানীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য ময়মনসিংহ বিভাগ একটি চমৎকার পছন্দ। 🌾
ছবি: বিরিশিরি, নেত্রকোণা (Source: tripadvisor)
📚 আরো পড়ুন (আপনার জন্য নির্বাচিত)
উপসংহার: ভ্রমণের নেশা চিরন্তন 💖
আমরা এই ব্লগ পোস্টে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি বিস্তৃত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। প্রতিটি বিভাগেই রয়েছে এমন কিছু বিশেষ আকর্ষণ, যা আপনাকে বারবার মুগ্ধ করবে। ঢাকা বিভাগের ঐতিহাসিক নিদর্শন থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের নদী ও বনাঞ্চল, এবং রাজশাহী-রংপুর-ময়মনসিংহের প্রাচীন ঐতিহ্য—সবকিছুই বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে।
মনে রাখবেন, ভ্রমণ শুধু ছবি তোলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি নতুন মানুষের সাথে মেশা, নতুন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা এবং নিজের জ্ঞানকে আরও বাড়ানোর সুযোগ। যখন আপনি স্থানীয় খাবারের স্বাদ নেবেন, কিংবা লোকনৃত্যের আনন্দ উপভোগ করবেন, তখনই আপনার ভ্রমণ পরিপূর্ণতা পাবে। আমরা চাই, আপনি শুধু আমাদের লেখা পড়েই উৎসাহিত হবেন না, বরং বাস্তবে এই স্থানগুলো ঘুরে এসে আপনার নিজের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।
একটি সফল ভ্রমণের মূলমন্ত্র হলো সঠিক পরিকল্পনা। আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কী দেখবেন এবং কীভাবে সেখানে পৌঁছাবেন—এই তিনটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকলে আপনার যাত্রা আরও সহজ হবে। ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আমরা আশা করি এই তথ্যবহুল গাইডলাইনটি আপনাকে একটি SEO ফ্রেন্ডলি এবং ইউনিক কনটেন্টের সুবিধা দেবে, যা গুগল ডিসকভার এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে সহজে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা তার আপন মহিমায় উজ্জ্বল, আর আমরা সেই ঔজ্জ্বল্যকেই তুলে ধরতে চেয়েছি। আপনার ব্যাগ গুছিয়ে নিন, কারণ আপনার অ্যাডভেঞ্চার এখন শুরু!
🙏 পাঠকের জন্য পরামর্শ: আপনার প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত!
❓ কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (Q&A)
-
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কোনটি এবং কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত হলো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, যা চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত। -
প্রশ্ন ২: ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত দুটি ঐতিহাসিক স্থান কী কী?
উত্তর: ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত দুটি ঐতিহাসিক স্থান হলো – খুলনার সুন্দরবন এবং বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ। -
প্রশ্ন ৩: একই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় কোন সৈকতে?
উত্তর: পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে একই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। -
প্রশ্ন ৪: লালন শাহের মাজার কোন জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: মানবতাবাদী ও সাধক লালন শাহের মাজার খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত। -
প্রশ্ন ৫: বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ঐতিহাসিক স্থান কোনটি?
উত্তর: বগুড়া জেলায় অবস্থিত মহাস্থানগড় হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। -
প্রশ্ন ৬: হাওর ভ্রমণের জন্য সেরা বিভাগ কোনটি এবং কেন?
উত্তর: হাওর ভ্রমণের জন্য সেরা বিভাগ হলো সিলেট বিভাগ। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর এবং হবিগঞ্জের হাওর এলাকাগুলো এর প্রধান কারণ। -
প্রশ্ন ৭: ভ্রমণ করার সময় কি স্থানীয় গাইড নেওয়া উচিত?
উত্তর: হ্যাঁ, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম (বান্দরবান, রাঙ্গামাটি) এবং সুন্দরবনের মতো জটিল এলাকায় স্থানীয় গাইড নেওয়া নিরাপদ ও বাধ্যতামূলক। -
প্রশ্ন ৮: ঢাকা বিভাগের দুটি ঐতিহাসিক কেল্লার নাম বলুন।
উত্তর: ঢাকা বিভাগের দুটি ঐতিহাসিক কেল্লা হলো – ঢাকার লালবাগ কেল্লা এবং মুন্সিগঞ্জের ইদ্রাকপুর কেল্লা। -
প্রশ্ন ৯: পরিবার নিয়ে একদিনের ভ্রমণের জন্য গাজীপুরের জনপ্রিয় স্থান কোনটি?
উত্তর: পরিবার নিয়ে একদিনের ভ্রমণের জন্য গাজীপুরের জনপ্রিয় স্থান হলো বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক এবং ভাওয়াল রাজবাড়ী। -
প্রশ্ন ১০: বাংলাদেশের 'শস্যভান্ডার' বলা হয় কোন বিভাগকে?
উত্তর: বরিশাল বিভাগকে 'বাংলার শস্যভান্ডার' বলা হয়, যা এর উর্বর ভূমি এবং ফসলের প্রাচুর্যের জন্য পরিচিত।
